#রিয়াদুস_সালেহীন দ্বিতীয় খণ্ড অনুচ্ছেদঃ৭৫ ক্ষমা প্রদর্শন ও অজ্ঞ-মূর্খদের সযত্নে এড়িয়ে চলা।

Muhammads words
0
#রিয়াদুস_সালেহীন দ্বিতীয় খণ্ড অনুচ্ছেদঃ৭৫

 

ক্ষমা প্রদর্শন ও অজ্ঞ-মূর্খদের সযত্নে এড়িয়ে চলা।

قَالَ اللهُ تَعَالَى : خُذِ الْعَفْوَ وَآمُرُ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ.

মহান আল্লাহ বলেন:

“ক্ষমাশীলতা অবলম্বন কর, সৎ কাজের আদেশ দান কর এবং মূর্খ লোকদের এড়িয়ে চল।” (সূরা আল আ'রাফ: ১৯৯)

وقال تعالى : فَاصْفَح الصَّفْحَ الْجَمِيلَ.


“অতএব তুমি পরম সৌজন্যের সাথে তাদের ক্ষমা করে দাও।” (সূরা আল হিজর : ৮৫)

وقال تعالى: وَلِيَعْفُوا وَلَيَصْفَحُوا الا تَحِبُّونَ أَنْ يُغْفِرَ اللهُ لَكُمْ، وَاللهُ غَفُورٌ رَّحِيم


“তারা যেন ওদের ক্ষমা করে এবং তাদের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন? আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল দয়ালু।” (সূরা আন্ নূর- ২২)

وَقَالَ تَعَالَى : وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ وَاللهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ.

“তারা লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল। আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।” (সূরা আলে ইমরান- ১৩৪)

وَقَالَ تَعَالَى : وَلَمَنْ صَبَرَ وَغَفَرَ إِنْ ذلِكَ لَمِنْ عَزْمِ الْأمور.

“যে লোক ধৈর্য ধারণ করে ও ক্ষমা করে, নিশ্চয় এটা দৃঢ় সংকল্পের কাজ।” (সূরা আশ্ শূরা : ৪৩)


٦٤٣ - وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتُ للنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ أَتَى عَلَيْكَ يَوْمَ كَانَ أَشَدَّ مِنْ يَوْمٍ أُحُدٍ قَالَ لَقَدْ لَقِيتُ مِنْ قَوْمِكَ وَكَانَ أَشَدُّ مَا لقِيْتُ مِنْهُمْ يَوْمَ الْعَقَبَةِ إِذْ عَرَضْتُ نَفْسِى عَلَى ابْنِ عَبْدِ يَالِيْلَ بْنِ عَبْدِ كُلَالَ فَلَمْ يُجبني إلى مَا أَرَدْتُ فَانْطَلَقْتُ وَأَنَا مَهْمُوم عَلى وَجْهِي فَلَمْ أَسْتَفِقُ الأ وآنا بِقَرْنِ التَّعَالِبِ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَإِذَا أَنَا بِسَحَابَةٍ قَدْ أَظَلَّتْنِي فَنَظَرْتُ فَإِذَا فِيهَا جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلامُ فَنَادَانِى فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَمَا رَدُّوا عَلَيْكَ وَقَدْ بَعَثَ إِلَيْكَ مَلَكَ الْجِبَالِ لتَأمُرَهُ بِمَا شِئْتَ فِيْهِمْ فَنَادَانِي مَلَكُ الْجِبَالِ فَسَلَّمَ عَلَى ثُمَّ قَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ اللهَ قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَأَنَا مَلَكُ الجبَالِ وَقَدْ بَعَثَنِي رَبِّي إِلَيْكَ لِتَأْمُرَنِي بِأَمْرِكَ فَمَا شِئْتَ إِنْ شِئْتَ أَطْبَقَتُ عَلَيْهِمُ الأخْشَبينَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَلْ أَرْجُو أَنْ تُخْرِجَ اللهُ مِنْ أَصْلَابِهِمْ اللهَ وَحْدَهُ لا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا - متفق عليه من يعبد


৬৪৩। আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিনের চাইতেও বেশি কঠিন কোন দিন কি আপনার উপর দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে? তিনি বলেন : হাঁ, আকাবার দিন আমি তোমার জাতির কাছ থেকে এমন আচরণের সম্মুখীন হয়েছি, যা উহুদের দিনের চাইতেও অধিকতর কঠিন ছিল, যখন আমি (তাওহীদের বাণী পেশ করার উদ্দেশে) ইবনে আব্দ্ ইয়ালীল ইবনে আবৃদ্ কুলালের নিকট নিজেকে পেশ করলাম। আমি যা চেয়েছিলাম, সে তার কোন জবাব দিল না। আমি তাই সেখান থেকে চিন্তাক্লিষ্ট মন নিয়ে চললাম, এমনকি কারনুস সাআলিব নামক স্থানে পৌঁছার আগ পর্যন্ত যেন আমার হুঁশই ছিল না। এখানে আমি মাথা তুলতেই দেখলাম, এক খণ্ড মেঘ আমার উপর ছায়া বিস্তার করে আছে। তাতে আমি জিবরীল আলাইহিস সালামকে দেখতে পেলাম। জিবরীল আমাকে ডেকে বলেন, মহান আল্লাহ আপনার কাউমের কথা ও আপনাকে তারা যে জবাব দিয়েছে তা শুনেছেন। আল্লাহ আপনার নিকট পাহাড়ের ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে আপনি তাকে আপনার ইচ্ছামত নির্দেশ দিতে পারেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : পাহাড়ের ফেরেশতা আমাকে ডেকে সালাম দিয়ে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ আপনার সাথে আপনার কাউমের কথাবার্তা শুনতে পেয়েছেন। আমি হচ্ছি পাহাড়ের ফেরেশতা। আমাকে আমার রব আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। আপনি নিজ ইচ্ছামত আমাকে যে কোন কাজের হুকুম করতে পারেন । আপনি যদি চান, আখশাবাইন ‘আল্‌ আশাব’ হল মক্কাকে বেষ্টনকারী দু'টি পাহাড়। খুব বড় পাহাড়কে আল-আশাব বলা হয় ।-এর উভয় পাহাড়কে আমি তাদেরসহ একত্রে মিলিয়ে দিই এবং কাফিরদের সমূলে ধ্বংস করে দিই)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন ঃ (আমি তাদের ধ্বংস কামনা করি না) আমি বরং আশা পোষণ করি যে, আল্লাহ এদের ঔরসে এমন সব লোক পয়দা করবেন যারা এক আল্লাহ্ দাসত্বকে কবুল করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। (বুখারী, মুসলিম)

٦٤٤ - وَعَنْهَا قَالَتْ مَا ضَرَبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا قَطُّ بِيَدِهِ ولَا امْرَأَةٌ وَلَا خَادِمًا إِلا أَنْ تُجَاهِدَ في سَبيل الله وَمَا نِيْلَ مِنْهُ شَيْ قَط يَنْتَقِمُ مِنْ صَاحِبِهِ إِلا أَن يُنْتَهَكَ شَيْ مِنْ مَحَارِمِ اللَّهِ تَعَالَى فَيَنْتَقِمُ لِلَّهِ تعالى- رواه مسلم.


৬৪৪ । আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করা ব্যতীত কখনো কাউকে মারেননি, না কোন স্ত্রীলোককে না কোন খাদিমকে । তাঁকে কষ্ট দেয়া সত্ত্বেও তিনি কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি । অবশ্য আল্লাহর নির্ধারিত কোন হারামকে লংঘন করা হলে আল্লাহ্ উদ্দেশ্যে তিনি প্রতিশোধ গ্রহণ করেছেন। (মুসলিম)

٦٤٥ - وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنتُ أَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ بُرْدُّ نَجْرَانِيُّ غَلِيظُ الْحَاشِيَة فَأَدْرَكَهُ أَعْرَابِی فَجَبَدَهُ بردانه جَبْدَةٌ شَدِيدَةٌ فَنَظَرْتُ إِلى صَفْحَة عَاتِقِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ أَثْرَتْ بِهَا حَاشِيَةُ الرِّدَاءِ مِنْ شِدَّةِ جَبْدَتِهِ ثُمَّ قَالَ يَا مُحَمَّدُ مُرْ لِي مِنْ مالِ اللَّهِ الَّذِي عِنْدَكَ فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ فَضَحِكَ ثُمَّ أَمَرَ لَهُ بِعَطا ء - متفق عليه .


৬৪৫। আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হাঁটছিলাম। তাঁর গায়ে ছিল মোটা বা চেপ্টা পাড়বিশিষ্ট একটি নাজরানী চাদর। এক বেদুইন তাঁর নিকট এসে তাঁর চাদরটি ধরে ভীষণ সজোরে টান দিল। আমি লক্ষ্য করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘাড়ের পার্শ্বদেশে সজোরে চাদর টানার দরুন চাদরের পাড়ের দাগ পড়ে গেছে। বেদুইন বলল, হে মুহাম্মাদ আপনার নিকট আল্লাহ্ দেয়া যে মাল-সম্পদ রয়েছে, তা থেকে আমাকে কিছু দেয়ার ব্যবস্থা করুন। তিনি লোকটির প্রতি তাকিয়ে হেসে দিলেন, তারপর তাকে কিছু দেয়ার নির্দেশ দিলেন। (বুখারী, মুসলিম)

ى اللهُ عَنْهُ قَالَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْكِي نَبِيَّا مِنَ الْأَنْبِيَاءِ صَلَوَاتُ اللَّهِ وَسَلَامُهُ عَلَيْهِمْ ضَرَبَهُ قَوْمُهُ فَادْمَوهُ وَهُوَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِهِ وَيَقُولُ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِي فَإِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُونَ متفق عليه.


৬৪৬। ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে তাকিয়ে আছি, তিনি আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাতু ওয়াসসালামের মধ্যকার একজন সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন। তাঁকে তাঁর কাউম আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল। তিনি নিজের চেহারা থেকে রক্ত মুছছিলেন আর বলছিলেনঃ হে আল্লাহ! আমার কাউমকে ক্ষমা করুন। কারণ এরা তো অবুঝ। (বুখারী, মুসলিম)

٦٤٧ - وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال ليسَ الشَّدِيدُ بِالصَّرَعَةِ إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ متفق عليه.


৬৪৭। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুস্তিতে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে জয়লাভ করাতে বীরত্ব নেই, বরং ক্রোধের মুহূর্তে নিজকে সংবরণ করতে পারাই প্রকৃত বীরত্বের পরিচায়ক। (বুখারী, মুসলিম

#মুহাম্মদের_বাণী #ইসলামিক_একাডেমি_এনপি #হে_মুমিনগণ! #ইবনে_মাজাহ  #হাদীস_বিশ্ব_নবীর_বাণী  #সুনানে_ইবনে_মাজাহ #রিয়াদুস_সালেহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
3/related/default