মহান আল্লাহ বলেন :
“তুমি বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহগুলো মাফ করবেন। আল্লাহ মহাক্ষমাশীল ও করুণাময়।” (সূরা আলে ইমরান : ৩১)
وَقَالَ تَعَالَى : يَايُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَنْ يُرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ في سَبِيلِ اللهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لإثم ذلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يُشَاءُ وَاللهُ واسع عليم
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি নিজের দীন ত্যাগ করে, (তার জেনে রাখা উচিত) অতি সত্ত্বর আল্লাহ এমন এক কাওম সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালোবাসবে, তারা ঈমানদারদের প্রতি অত্যন্ত সদয় এবং কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর হবে। তারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করবে না। এটা আল্লাহ্র অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।” (সূরা আল মা-ইদা : ৫৪)
٣٨٦- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ان الله تَعَالَى قَالَ مَنْ عَادَى لِى وَلِيًّا فَقَدْ أذَنْتُهُ بِالْخَرَابِ وَمَا تَقَرِّبَ إِلَى عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبُّ إِلَى مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِى يَتَقَرِّبُ إِلَى بِالنّوافِلِ أحِبَّهُ فَإذا أحببتُهُ كُنتُ سَمعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ وَيَدَهُ الَّتِي بْطِسُ بِهَا وَرَجُلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا وإِنْ سَأَلَنِي أَعْطَيْتُهُ وَلَئِنِ اسْتَعَاذَنِي لأعيدَنَّهُ - رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ . مَعْنى أذَنْتُهُ اعْلَمْتُهُ بِأَنِّي مُحَارِبُ لَهُ وَقَوْلُهُ اسْتَعَاذَنَيْ رُويَ بِالْبَاءِ وَرُويَ بِالنُّون.
৩৮৬। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর সাথে দুশমনি রাখে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমি আমার বান্দার উপর যা ফরয করেছি, এর চাইতে বেশি প্রিয় কোন কিছু নিয়ে সে আমার নিকটবর্তী হয় না। আমার বান্দা সব সময় নফলের মাধ্যমে আমার নিকটবর্তী হতে থাকে, অবশেষে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি । আমি যখন তাকে ভালোবাসি, তখন সে যে কানে শ্রবণ করে আমিই তার সেই কান হয়ে যাই, সে যে চোখে দেখে, আমিই তার সেই চোখ হয়ে যাই, সে যে হাতে ধরে আমিই তার সেই হাত হয়ে যাই এবং সে যে পায়ে হাঁটে আমিই তার সেই পা হয়ে যাই । সে যখন আমার কাছে কিছু চায়, তাকে আমি তা দান করি এবং সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি তাকে আশ্রয় দান করি।
ইমাম বুখারী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। اذنته অর্থ: اعلمته আমি তাকে জানিয়ে দিই বা ঘোষণা করি যে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। استعاذنی অর্থ : সে আমার কাছে আশ্রয় চায়।
۳۸۷ - وَعَنْهُ عَنِ الَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَمَ قَالَ إِذَا احَبِّ الله تَعَالَى الْعَبْدَ نادي جِريلَ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فَلَانُ فَأَحْبِبْهُ فَيُحِبُهُ جِبرِيلُ فَيُنَادِي فِي أَهْلِ السَّمَاءِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فَلَانًا فَاحِبَّؤُهُ فَيُحِبُّهُ اَهْلُ السَّمَاءِ ثُمَّ يُوْضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي الْأَرْضِ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسلِمِ قَال رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى إِذَا أَحَبٌ عَبْدًا دعَا جِبْريلَ فَقَالَ إِنِّي أُحِبُّ فُلَانًا فَأَحْبِبُهُ فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي السَّمَاءِ فَيَقُولُ إِنَّ اللهَ يُحِبُّ فَلَانَا فَاحِبُهُ اهْلُ السَّمَاءِ ثُمَّ يُوْضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي الْأَرْضِ وَإِذَا ابْغَضَ عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ فَيقُولُ إِنِّي أَبْغِضُ فُلَانًا فَأَبْغِضُهُ جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي أَهْلِ السَّمَاءِ إِنَّ اللَّهَ يُبْغِضُ فُلَانًا فَابْغِضُوهُ فَيْبغِضُهُ أَهْلُ السَّمَاءِ إُمَّ تُوزَعُ لَهُ الْبَغِضُفِي الْأَرْضِ .
৩৮৭। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ তা'আলা যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীল (আ)-কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, সুতরাং তুমিও তাকে ভালোবাস। অতঃপর জিবরীল (আঃ) তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করেন যে, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস। অতঃপর সে পৃথিবীতে জনপ্রিয় হয়ে যায়।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। মুসলিমের আর একটি বর্ণনায় আছে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ তা'আলা যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীলকে ডেকে বলেন: আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসি, সুতরাং তুমিও তাকে ভালোবাস।
অতঃপর জিবরীল (আঃ) তাকে ভালোবাসেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করেন যে, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, সুতরাং তোমরাও তাকে ভালোবাস।
অতঃপর পৃথিবীতে সে জনপ্রিয় হয়ে যায়। আর যখন তিনি (আল্লাহ) কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন, তখন জিবরীলকে ডেকে বলেন, আমি অমুককে ঘৃণা করি, সুতরাং তুমিও তাকে ঘৃণা কর।
অতঃপর জিবরীল তাকে ঘৃণা করেন এবং আসমানবাসীদের মাঝে ঘোষণা করে বলেন: আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন, কাজেই তোমরাও তাকে ঘৃণা কর, অতঃপর আসমানবাসীরা তাকে ঘৃণা করতে থাকে এবং পৃথিবীতেও তাকে ঘৃণিত লাঞ্ছিত বানিয়ে দেয়া হয়।
۳۸۸ - عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ رَجُلاً عَلَى سَرِيَّةٍ فَكَانَ يَقْرَأُ لِأَصْحَابِهِ فِي صَلَاتِهِمْ فَيَخْتِمُ (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) فَلَمَّا رَجَعُوا ذَكَرُوا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ سَلُوهُ لِأَيِّ شَيْءٍ يَصْنَعُ ذَلِكَ ؟ فَسَأَلُوهُ فَقَالَ لِأَنَّهَا صِفَةُ الرَّحْمٰنِ فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَقْرَأَ بِهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اخْبِرُوهُ أَنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُحِبُّهُ - متفق عليه
৩৮৮। আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে একটি ক্ষুদ্র সেনাবাহিনীর অধিনায়ক বানিয়ে পাঠান। সে তার সাথীদের নামাযে কিরাআত পড়ত এবং প্রতিটি কিরাআতে কুল হুয়াল্লাহু আহাদ (সূরা আল ইখলাস) পড়ে শেষ করত ।
অতঃপর তারা ফিরে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ ব্যাপারটা জানাল। তিনি বলেনঃ তোমরা তাকে জিজ্ঞেস কর, কেন সে এরূপ করত? তারা তাকে জিজ্ঞেস করল। সে বলল, এ সূরাতে আল্লাহ্ গুণগান ও মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে। তাই আমি তা পড়তে ভালোবাসি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তাকে জানিয়ে দাও, নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাকে ভালোবাসেন ।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ।
