#রিয়াদুস_সালেহীন দ্বিতীয় খণ্ড অনুচ্ছেদঃ১১ মেহমানের তা'যীম ও সাদর অভ্যর্থনা।

Muhammads words
0

قَالَ اللهُ تَعَالَى : هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ ضَيْفَ إِبْرَاهِيمَ الْمُكْرَمِينَ . إِذْ دَخَلُوا عَلَيْهِ فَقَالُوا سَلَامًا قَالَ سَلامٌ قَوْمٌ مُنْكَرُونَ - فَراغَ إِلَى أَهْلِهِ فَجَاءَ بِعِجُلٍ سَمِيْن فَقَرَبَهُ إِلَيْهِمْ قَالَ إِلا تَأْكُلُونَ.


“ইবরাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত তোমার নিকট পৌঁছেছে কি? তারা যখন তার নিকট এসে বলল, আপনাকে সালাম, সে বলল, আপনাদেরও সালাম। অপরিচিত লোক এরা। পরে সে চুপচাপ তার স্ত্রীর নিকট চলে গেল এবং একটা মোটাতাজা ভুনা বাছুর নিয়ে এসে মেহমানদের সামনে পেশ করল। সে বলল, আপনারা খাচ্ছেন না কেন?” (সুরা আয্ যারিয়াত: ২৪-২৭)

وَقَالَ تَعَالَى : وَجَاءَهُ قَوْمُهُ يُهْرَعُونَ إِلَيْهِ وَمِنْ قَبْلُ كَانُوا يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ قَالَ يَا قَوْمِ هَؤُلاء بَنَاتِي هُن أَطْهَرُ لَكُمْ فَاتَّقُوا اللَّهَ وَلَا تُخْزُونِ فِي ضَيْفِي الْيْسَ مِنْكُمْ رَجُلٌ رَشِيدٌ .


“তার সম্প্রদায় তার নিকট উদভ্রান্ত হয়ে ছুটে এল এবং পূর্ব থেকে তারা কুকর্মে লিপ্ত ছিল। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! এরা আমার কন্যা। তোমাদের জন্য এরা পরিত্র। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার মেহমানদের ব্যাপারে আমাকে হেয় করো না। তোমাদের মধ্যে কি কোন ভালো মানুষ নেই?” (সূরা হূদ: ৭৮)

٧.٦ - عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فليصل رَحِمَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْراً أو لِيَصْمُتْ متفق عليه.


৭০৬। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সমাদর করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি আস্থা রাখে, সে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা নবীর থাকে। (বুখারীী, ও মুসলিম)

۷۰۷- وَعَنْ أَبِي شُرَيْحٍ خُوَيْلِدِ بْنِ عَمْرُو الْخَزَاعِيُّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ جَائِزَتَهُ قَالُوا وَمَا جَائِزَتُهُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ يَوْمُهُ وَلَيْلَقُهُ والضيافة ثلاثَةُ أَيَّامٍ فَمَا كَانَ وَرَا ، ذلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ عَلَيْهِ- متفق عليه. وَفِي يُقِيمَ عِنْدَ أَخِيهِ حَتَّى يُؤْثِمَهُ قَالُوا يَا رَسُولَ الله رواية لِمُسْلِمٍ لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِم أن يُقيم . وكَيْفَ يُؤْثِمُهُ قَالَ يُقيمُ عِنْدَهُ وَلَا شَيْءَ لَهُ يَقْرِنِهِ بِهِ.


৭০৭। আবু শুরাইহ্ খুয়াইলিদ ইবনে আমর আল-খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে তার হক আদায় সহকারে। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তার হক কী? তিনি বলেনঃ তার একদিন ও একরাত (তাকে সমাদর ও যত্ন করবে)। মেহমানদারির সীমা হল তিন দিন। এর চাইতে অতিরিক্ত করা দানস্বরূপ৷

ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইমাম মুসলিমের এক বর্ণনায় রয়েছে: মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের নিকট সে পরিমাণ সময় (মেহমান হিসেবে) অবস্থান করা হালাল নয় যা তাকে গুনাহগার বানিয়ে দেয়। সাহাবীগণ বলেন, সে তাকে গুনাহগার বানাবে কিরূপে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সে তার নিকট অবস্থান করতে থাকবে। অথচ তার নিকট এমন কোন জিনিস নেই, যা দিয়ে সে তার মেহমানদারি করবে। তিন দিন মেহমানদারি করবে। প্রথমদিন যথাসম্ভব আয়োজন করবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন স্বাভাবিক খাবার পরিবেশন করবে। আর জায়িযাহ-এর অর্থও তা-ই। মূল হাদীসে জায়িযাহ শব্দটির উল্লেখ রয়েছে। জায়িযা অর্থ পুরস্কার, তোহফা ও স্বাদ ইত্যাদি। এখানে এর অর্থ শুধুমাত্র একদিন। মেহমানের সমাদর ও যত্ন করা একটি চারিত্রিক গুণ বা বৈশিষ্ট্য। হাদীসে তার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। ইমাম জাফর সাদিক বলেন, যখন আপন ভাইদের সাথে দস্তরখানে বসবে, দীর্ঘক্ষণ বসবে। কারণ এটা এমন একটা মুহূর্ত যে, তোমার জীবনের এ সময়টির কোন হিসাব গ্রহণ করা হবে না।

মেহমানের তা'যীম ও সাদর অভ্যর্থনা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
3/related/default