#রিয়াদুস_সালেহীন দ্বিতীয় খণ্ড অনুচ্ছেদঃ৩ জামা ও আ*স্তিনের দৈ*র্ঘ্যের বর্ণনা।

Muhammads words
0

কচ্চর্তা ও আস্তিনের পরিমাণ। লুঙ্গি ও পাগড়ীর সীমা। অহংকার বশত কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম, তবে অহংকারমুক্ত হলে তা জায়েয।


٧٩ - عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ الْأَنْصَارِيةِ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ كُمُّ قَمِيصِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الرُّش - رواه أبو داود والترمذي وقال حديث حسن


৭৯০। আসমা বিনতে ইয়াযীদ আনসারীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামার আস্তিন ছিল হাতের কব্জি পর্যন্ত।

ইমাম আবু দাউদ ও ইমাম তিরমিযী হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান।

۷۹۱- وَعَن ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ ازارِى يَسْتَرْخي إلا أن أتَعَاهَدَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّكَ لسْتَ مِمَّنْ يَفْعَلُهُ خُيَلاَءَ - رواه البخاري وروى مسلم بَعْضَهُ.


৭৯১। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অহংকারবশে তার কাপড় (গোছার নিচে) ঝুলিয়ে দেয়, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তার প্রতি তাকাবেন না। আর বাক্ (রাঃ) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার তহবন্দ তো প্রায়ই ঝুলে যায়, যদি না আমি সচেতন থাকি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন: তুমি তাদের মধ্যে শামিল নও, যারা অহংকারবশে কাপড় ঝুলিয়ে থাকে। ইমাম বুখারী হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন এবং ইমাম মুসলিম এর অংশবিশেষ বর্ণনা করেছেন।

۷۹۲- وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لا يَنظُرُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَة إلى مَنْ جَر إزاره بطرا - متفق عليه.


৭৯২। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ কিয়ামাতের দিন সেই ব্যক্তির দিকে তাকাবেন না যে০অহংকারবশে তার তহবন্দ বা পাজামা (গোছার নিচে) ঝুলিয়ে দেয়। (বুখারী)

۷۹۳- وَعَنْهُ عَن النَّبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا أَسْفَلَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الْازار ففي النار - رواه البخاري .


৭৯৬। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুই পায়ের টাখনুর নীচে তহবন্দ যে পরিমাণ স্থান ঢেকে রাখবে তা জাহান্নামে যাবে। (বুখারী,

٧٩٤ - وَعَنْ أَبي ذَرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ ثَلاثَةٌ لا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ قَالَ فَقَرَأَهَا رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلاث مرارٍ قَالَ أَبُو ذَرِّ خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنَفِقُ سِلْعَتَهُ بالخلف الْكَاذِبِ- رواه مسلم. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ المُسْبِلُ إِزارَهُ .


৭৯৪। আবু যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তিনজন লোকের সাথে আল্লাহ কিয়ামাতের দিন কথা বলবেন না, তাদের প্রতি ফিরে তাকাবেন না এবং তাদের (শুনাহ থেকে) পাকও করবেন না। উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাগুলো তিন তিনবার বলেন । আবু যার (রা) বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! এসব বিফল মনোরথ ও ক্ষতিগ্রস্ত লোক কারা? তিনি বলেন: (১) যে ব্যক্তি অহংকারবশে কাপড় (গোছার নিচে) ঝুলিয়ে দেয়, (২) যে ব্যক্তি উপকার করে খোঁটা দেয় বা বলে বেড়ায় এবং (৩) যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে তার পণ্য বিক্রয় করে।

ইমাম মুসলিম হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। তাঁর আরেক বর্ণনায় রয়েছেঃ যে ব্যক্তি তার লুঙ্গি হেঁচড়িয়ে চলে।

٧٩٥ - وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَن النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الْأَسْبَالُ فِي الْإِزارِ وَالْقَمِيصِ وَالْعِمَامَةِ مَنْ جَرَّ شَيْئًا خُيَلَاءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَة - رواه أبو داود والنسائي بإسناد صحيح.


৭৯৫। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তহবন্দ বা পাজামা, জামা ও পাগড়ীই ঝুলিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি অহংকারবশে এরূপ কিছু ঝুলিয়ে দেবে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তার প্রতি তাকাবেন না।

ইমাম আবু দাউদ ও ইমাম নাসাঈ সহীহ সনদে হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন।

٧٩٦ - وَعَنْ أَبِى جُرَيْ جَابِرِ بْنِ سُلَيْم رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ رَجُلاً يَصْدُرُ النَّاسُ عَنْ رَايِهِ لا يَقُولُ شَيْئًا الأَصَدَرُوا عَنْهُ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُلْتُ عَلَيْكَ السَّلامُ يَا رَسُولَ الله مَرَّتَيْن قَالَ لَا تَقُلْ عَلَيْكَ السلامُ، عَلَيْكَ السَّلامُ تَحِيَّةُ الْمَوْتَى قَل السَّلامُ عَلَيْكَ قَالَ قُلْتُ أَنْتَ رَسُولُ اللهِ ؟ قَالَ أَنَا رَسُولُ الله الذى إذا أصَابَكَ ضُرُّ فَدَعَوْتَهُ كَشَفَهُ عَنْكَ وَإِذَا أصَابَكَ عَامُ سَنَةٍ فَدَعَوْتَهُ أَنْبَتَهَا لَكَ وإذا كُنْتَ بِأَرْضِ قَفْرٍ أَوْ فَلَاةٍ فَضَلَّتْ راحلتُكَ فَدَعَوْتَهُ رَدَّهَا عَلَيْكَ قَالَ قُلْتُ اعْهَدُ الَى قَالَ لَا تَسُبُنُ أَحَدًا قَالَ فَمَا سَبَبْتُ بَعْدَهُ حُراً وَلاَ عَبْداً وَلَا بَعِيرًا وَلا شَاءَ وَلاَ تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا وَآنْ تكلم أَخَاكَ وأنتَ منبسط إليه وَجْهَكَ أن ذلك منَ الْمَعْرُوفِ وَارْفَعُ ازاركَ الى نصف الساق فَانْ آبَيْتَ قَالَى الْكَعْبَيْنِ وإِيَّاكَ وَأَسْبَالَ الْإِزارِ فَانَّهَا مِنَ المخيلة وإن الله لا يُحِبُّ المَخيلة وان امْرُوا شَتَمَكَ وَغَيْرَكَ بِمَا يَعْلَمُ فِيْكَ فَلَا تُعيّرَهُ بِمَا تَعْلَمُ فِيْهِ فَإِنَّمَا وَبَالُ ذَلِكَ عَلَيه- رواه أبو داود والترمذي بإسناد صحيح وقال الترمذي حديث حسن صحيح


৭৯৬। আবু জুরাই জাবির ইবনে সুলাইম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একজনকে দেখলাম, লোকেরা তার মতামতের অনুসরণ করছে। তিনি যাই বলেন, লোকজন তাই গ্রহণ করছে। আমি বললাম, ইনি কে? লোকেরা বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আমি বললাম, আলাইকাস্ সালামু ইয়া রাসূলাল্লাহ! এভাবে দু’বার বললাম। তিনি বলেন: আলাইকাস সালাম বলো না। কারণ আলাইকাস সালাম হল মৃতের সালাম, বরং বল: আস্সালামু আলাইকা। আমি বললাম, আপনি কি আল্লাহ্ রাসূল? তিনি বলেনঃ (হাঁ) আমি সেই আল্লাহ্র রাসূল, তুমি কোন বিপদ-মুসিবাতে পড়ে যাঁর নিকট দু'আ কর এবং যিনি তা দূর করেন, তুমি দুর্ভিক্ষে পড়ে যার নিকট দু'আ কর এবং যিনি তোমার জন্য শস্য উৎপন্ন করেন, তুমি জনমানবহীন অথবা পানিবিহীন প্রান্তরে তোমার সওয়ারী হারিয়ে যাঁর নিকট দু'আ কর এবং যিনি তোমাকে তা ফিরিয়ে দেন। জাবির ইবনে সুলাইম বলেন, আমি বললাম, আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বলেন: কাউকে কখনো গালি-গালাজ করো না। জাবির বলেন, এরপর আমি কখনো আযাদ, গোলাম, উট, বকরীকেও গালি দিইনি। ভালো ও নেকির কোন কাজকে তুচ্ছ জ্ঞান করো না। তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলবে। এটিও একটি নেকির কাজ। ইযার বা তহবন্দ তোমার হাঁটুর নীচে অর্ধেক পর্যন্ত তুলে রাখবে। এত দূর যদি ওঠাতে তোমার বাধা থাকে তাহলে অন্তত টা পর্যন্ত তুলে রাখবে। লুঙ্গি ঝুলিয়ে দেয়া থেকে দূরে থাকবে। কারণ এটা হচ্ছে অহংকারের অন্তর্গত। আর আল্লাহ অহংকার পছন্দ করেন না। কেউ যদি তোমাকে গালি দেয় অথবা তোমার সম্পর্কে সে যা জানে সে বিষয়ে তোমার দুর্নাম করে, তুমি তার সম্পর্কে যা জান, সে বিষয়ে তার দুর্নাম করো না। কারণ এর খারাপ পরিণাম তারই উপর বর্তাবে।

ইমাম আবু দাউদ ও ইমাম তিরমিযী সহীহ সনদ সহকারে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।

۷۹۷- وَعَنْ أبي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَيْنَمَا رَجُلٌ تُصَلِى مُسْبُل ازارَهُ قَالَ لَهُ رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اذْهَبْ فَتَوَضَّأَ فَذَهَبَ فَتَوَضًا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ اذْهَبْ فَتَوَضَّأَ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ الله مَا لَكَ أَمَرْتَهُ أَنْ تَتَوَضًا ثُمَّ سَكَتْ عَنْهُ قَالَ إِنَّهُ كَانَ يُصَلَّى وَهُوَ مُسْبِل إِزارَهُ وَإِنَّ اللهَ لا يَقْبَلُ صَلَاةَ رَجُلٍ مُسْبِل - رواه ابو داود باسناد صحيح على شرط مسلم .


৭৯৭। আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত ! তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি (টাখনুর নিচে) তহবন্দ ঝুলিয়ে নামায পড়ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন, যাও, আবার উযু কর। সে গিয়ে পুনরায় উযু করে এল। তিনি আবার বলেন: যাও, আবার উযু কর। সে গেল ও পুনরায় উযু করে এল । একজন বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কে তাকে উযু করার নির্দেশ দিচ্ছেন, অতঃপর তার ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করছেন? তিনি বলেনঃ এ ব্যক্তি তার তহবন্দ (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে নামায পড়ছিল। অথচ আল্লাহ এমন লোকের নামায কবুল করেন না, যে তার তহবন্দ ঝুলিয়ে দিয়ে নামায পড়ে ৷

ইমাম আবু দাউদ ইমাম মুসলিমের শর্তে এ হাদীস সহীহ সনদে রিওয়ায়াত করেছেন।

۷۹۸- وَعَنْ قَيْسِ بْنِ بِشْرِ التَّعْلِبِي قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي وَكَانَ جَلِيسًا لِأَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ كَانَ بِدِمَشْقَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَالُ لَهُ سَهْلُ بنُ الحَنْظَلِيَّة وَكَانَ رَجُلاً مُتَوَحِداً قَلَمَا يُجَالِسُ النَّاسَ انَّمَا هُوَ صَلَاةٌ فَاذَا فَرَغَ فَإِنَّمَا هُوَ تَسْبِيحَ وَتَكْبِيرٌ حَتَّى يَأْتِيَ أَهْلَهُ فَمَرَّ بِنَا وَنَحْنُ عِنْدَ أَبِي الدَّرْدَاءِ فَقَالَ لَهُ أبو الدَّرْدَاء كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ قَالَ بَعَثَ رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةٌ فَقَدِمَتْ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَجَلَسَ فِي الْمَجْلِسِ الَّذِي يَجْلِسُ فِيْهِ رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لِرَجُل الى جَنْبِهِ لَوْ رَأَيْتَنَا حِيْنَ الْتَقَيْنَا نَحْنُ وَالْعَدُوُّ فَحَمَلَ فُلاَنَّ وَطَعَنَ فَقَالَ خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلَامُ الْغَفَارِيُّ كَيْفَ تَرَى فِي قَوْلِهِ قَالَ مَا آرَاهُ الأ قَدْ بَطَلَ أَجْرُهُ فَسَمِعَ بذلك أَخَرُ فَقَالَ مَا أَرَى بِذلِكَ بَأْسًا فَتَنَازَعًا حَتَّى سَمِعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ سُبْحَانَ اللَّهَ لَا بَأْسَ أنْ يُؤْجَرَ وَيُحْمَدَ فَرَأَيْتُ أَبَا الدَّرْدَاء سُرِّ بذلكَ وَجَعَلَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ الله وَيَقُولُ أَنْتَ سَمِعْتَ ذلكَ مِن رَّسُول الله صلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُولُ نَعَمْ فَمَا زَالَ يُعِيدُ عَلَيْهِ حَتَّى إِنِّي لَأَقُولُ لَيَبُرُكَنَّ عَلَى رَكْبَتَيْهِ قَالَ فَمَرَّ بِنَا يَوْمًا أَخَرَ فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْدَاء كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلَا تَضُرُّكَ قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُنْفِقُ عَلَى الْخَيْلِ كَالْبَاسِطِ يَدِهِ بِالصَّدَقَةِ لاَ يَقْبِضُهَا ثُمَّ مَرَّ بِنَا يَوْمًا أَخَرَ فَقَالَ لَهُ أبو الدرداء ، كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلا تَضُرُّكَ قَالَ قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِعْمَ الرَّجُلُ خُرَتِمُ الْأُسَيْدِيُّ لَوْ لاَ طُولُ جُمَّتِهِ وَإِسْبَالُ إِزارِهِ فَبَلَغَ خُرَيْمًا فَعَجَلَ فَأَخَذَ شَفْرَةً فَقَطعَ بهَا جُمْتَهُ إلى أذنَيْهِ وَرَفَعَ ازارَهُ إلى أنصاف سَاقَيْهِ. ثُمَّ مَرَّبنَا يَوْمًا أَخَرَ فَقَالَ لَهُ أبو الدرداء ، كَلمَة تَنْفَعُنَا وَلَا تَضُرُّكَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِنَّكُمْ قَادِمُونَ عَلَى إِخْوَانِكُمْ فَأَصْلِحُوا رحَالَكُمْ وَأَصْلِحُوا لِبَاسَكُمْ حَتَّى تَكُونُوا كَانُكُمْ شَامَةٌ فِي النَّاسِ فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْفُحْشَ وَلَا التَّفَحُش- رواه أبو داود بإسناد حَسَن إِلا قَيْسَ بْنَ بِشر فَاخْتَلَفُوا فِي تَوْثِيقه وتَضْعيفه وَقَدْ رُوى لَهُ مسلم


৭৯৮। কায়েস ইবনে বিশ্ব আত-তাগলিবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আমার পিতা অবহিত করেন যে, তিনি ছিলেন আবুদ দারদা (রাঃ)-এর সাথী। তিনি (বিশ্ব) বলেন, দামিশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন সাহাবী ছিলেন। তাঁসে সাহল ইবনে হানযালিয়্যা বলা হত । তিনি নির্জনতা বেশি পছন্দ করতেন, লোকদের সাথে মেলামেশা খুব কমই করতেন, নামাযেই অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিতেন, নামায থেকে অবসর হয়ে তাসবীহ ও তাকবীরে মশগুল থাকতেন তার পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত। (একদা) তিনি আমাদের নিকট দিয়ে গেলেন। আমরা তখন আবুদ্ দারদা (রাঃ)-এর নিকট বসা ছিলাম। আবুদ্ দারদা (রাঃ) তাঁকে বলেন, এমন কোন কথা আমাদের বলে দিন, যা আমাদের উপকারে আসবে অথচ আপনারও কোন ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ক্ষুদ্র বাহিনী পাঠালেন। বাহিনী ফিরে আসার পর তাদের একজন এসে ঐ মজলিসে বসল যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বসা ছিলেন। আগত লোকটি তাঁর পাশে বসা লোকটিকে বলল, যদি তুমি আমাদের তখন দেখতে পেতে যখন জিহাদের ময়দানে আমরা শত্রুর মুখোমুখি হয়েছিলাম, অমুক (কাফির) বর্ণা উঠিয়ে আক্রমণ করলো এবং খোঁটা দিলো। জবাবে (আক্রান্ত মুসলিমটি) বলর, এই নে আমার পক্ষ থেকে, আর আমি হচ্ছি গিফার গোত্রের যুবক। তার এই বক্তব্য সম্পর্কে আপনি কী বলেন? লোকটি বলল, আমার মতে (অহংকারের কারণে) তার সাওয়াব নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যজন একথা শুনে বলল, আমি তো এতে কোন দোষ দেখি না। তারা বিতর্কে লিপ্ত হল, এমনকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তা শুনে ফেলেন। তিনি বলেন: সুবহানাল্লাহ! এতে কোন দোষ নেই, সে (আখিরাতে) পুরস্কৃত হবে এবং (দুনিয়ায়) প্রশংসিত হবে। কায়েস ইবনে বিশ্ব আমি আবুদ্ দারদা (রাঃ)-কে দেখলাম, তিনি এতে খুশি হয়েছেন এবং তাঁর দিকে নিজের মাথা তুলে বলেন, আপনি কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একথা শুনেছেন? ইবনে হানযালীয়া (রাঃ) বলেণ, হাঁ শুনেছি। আবদু দারদা (রাঃ) বারবার এ কথাটি ইবনে হানযালীয়ার সামনে বলতে লাগলেন। আমি শেষে বলেই ফেললাম, আপনি কি ইবনে হানযালীয়ার হাঁটুর উপর চড়ে বসতে চান?

বিশ্ব (রাঃ) বলেন, অন্য একদিন ইবনে হানযালীয়া (রাঃ) আবার আমাদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আবুদ্ দারদা (রাঃ) তাকে বলেন, এমন কিছু কথা বলুন যা আমাদের কাজে লাগে এবং আপনারও ক্ষতি না হয়। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেন: যে বক্তি তার ঘোড়ার খাবারের জন্য অর্থ ব্যয় করে সে এমন এক ব্যক্তির ন্যায় যে সাদাকা দেয়ার জন্য নিজের হাত বাড়িয়ে দেয় এবং তা আর টেনে নেয় না। তারপর আর একদিন ইবনে হানযালীয়া (রাঃ) আমাদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আবুদ্ দারদা (রাঃ) তাঁকে বলেন, এমন কিছু কথা আমাদেরকে বলুন, যাতে আমরা লাভবান হই এবং আপনার ক্ষতি না হয়। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খুরাইম আল্‌-উসাইদী কী চমৎকার ব্যক্তি যদি তার চুল বেশি লম্বা না হত এবং তার ইযার টাখনুর নিচে না পড়ত। কথাটি খুরাইমের কানে পৌঁছে গেলো। তিনি দ্রুত ছুরি নিয়ে নিজের চুল কান পর্যন্ত কেটে ফেললেন এবং নিজের ইযারটি হাঁটু ও টাখনুর মাঝখানে অর্ধাংশ পর্যন্ত উঠিয়ে নিলেন। তারপর আর একদিন ইবনে হানযালীয়া (রাঃ) আমাদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আবুদ দারদা (রাঃ) তাঁকে বলেন, এমন কিছু কথা আমাদের শুনান যাতে আমাদের লাভ হয় এবং আপনার কোন ক্ষতি না হয়। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ তোমরা নিজেদের ভাইদের কাছে যাচ্ছ। কাজেই তোমরা নিজেদের হাওদাগুলো ঠিক কের নাও এবং নিজেদের পোশাকগুলোও ঠিক করে নাও, এমনকি তোমরা লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম পোশাকধারী ও সর্বোত্তম চেহারার অধিকারী হয়ে যাও। কারণ আল্লাহ অশ্লীলতার ধারক ও নিঃসংকোচে অশ্লীল কার্য সম্পাদনকারীকে ভালোবাসেন না।

ইমাম আবু দাউদ উত্তম সনদে হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। তবে কায়েস ইবনে বিশ্বরের হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে শক্তিমত্তা ও দুর্বলতার ব্যাপারে মতবিরোধ আছে। 

ইমাম মুসলিমও তার থেকে হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।

٧٩٩ - وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ازْرَةُ الْمُسْلِمِ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ وَلَا حَرَجَ أَوْ لَا جُنَاحَ فِيْمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْكَعْبَيْنِ فَمَا كَانَ أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ فَهُوَ فِى النَّارِ وَمَنْ جَرِّ إِزَارَهُ بَطَراً لَمْ يَنْظُرِ اليه - رواه ابو داود باسناد صحيح. الله ال


৭৯৯। আবু সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: মুসলিমের লুংগি বা পাজামা পায়ের গোছার মাঝামাঝি স্থান পর্যন্ত লম্বা হবে। অবশ্য টাখনু গিরা ও পায়ের গোছার মাঝামাঝি স্থানে থাকাও দোষের নয়। টাখনু গিরার নিচে যেটুকু থাকবে, তা জাহান্নামে যাবে। যে লোক অহংকারের বশবর্তী হয়ে লুংগি বা পাজামা নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেয়, (কিয়ামাতের দিন) আল্লাহ তার প্রতি ফিরেও তাকাবেন না।

۸۰۰- وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ مَرَرْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفي إزاري استرخاء فَقَالَ يَا عَبْدَ اللهِ ارْفَعُ إِزارَكَ فَرَفَعْتُهُ ثُمَّ قَالَ زِدْ فَزِدْتُ فَمَا زِلْتُ أَتَحَراهَا بَعْدُ فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ إِلَى أَيْنَ فَقَالَ إِلَى أَنْصَافِ الساقين- رواه مسلم.


৮০০। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট দিয়ে গেলাম। আমার তহবন্দ তখন (গোছার) নিচে ঝুলন্ত ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: হে আবদুল্লাহ! তোমার তহবন্দ উপরে উঠাও। আমি তা উপরে উঠালাম। তিনি আবার বললেন: আরো উঠাও। আমি তা আরো উঠালাম। এভাবে তাঁর নির্দেশক্রমে আমি তা উঠাতেই থাকলাম। লোকদের একজন বলল, তা কতদূর উঠাতে হবে? তিনি বলেন : দু'পায়ের গোছার মাঝামাঝি পর্যন্ত। (মুসলিম)

۸۰۱- وَعَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلَاءَ لَمْ ينظر الله الله يَوْمَ الْقِيامَةِ فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ فَكَيْفَ تَصْنَعُ النِّسَاءُ بِدُيُولِهِنَّ قَالَ يُرخين شبراً قَالت إذا تَنْكَشفُ اقْدَامُهُنَّ قَالَ فَيُرخينَهُ ذراعًا لَا يَزِدْنَ - رواه أبو داود والترمذي وقال حديث حسن صحيح


৮০১। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি অহংকারবশে তার কাপড় (টাখনুর নিচে) ঝুলিয়ে চলবে, কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তার প্রতি ফিরেও তাকাবেন না। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, তাহলে মহিলারা তাদের আঁচলের ব্যাপারে কি করবে? তিনি বলেন: তারা (গোছা থেকে এক বিঘত পরিমাণ ঝুলিয়ে রাখবে। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, এতে তো তাদের পা উন্মুক্ত হয়ে পড়বে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: তাহলে তারা এক হাত পরিমাণ নিচে পর্যন্ত ঝুলাতে পারে, এর চাইতে যেন বেশি না ঝুলায়।

ইমাম আবু দাউদ ও ইমাম তিরমিযী এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন। ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান ও সহীহ।

#মুহাম্মদের_বাণী #ইসলামিক_একাডেমি_এনপি #হে_মুমিনগণ! #ইবনে_মাজাহ  #হাদীস_বিশ্ব_নবীর_বাণী  #সুনানে_ইবনে_মাজাহ #রিয়াদুস_সালেহীন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
3/related/default